জনাব রিয়াসাত মহান আল্লাহ তায়ালাকে সৃষ্টিকর্তা ও পালনকর্তা হিসেবে বিশ্বাস করেন। মাঝে-মধ্যে সালাত ও সাওম পালন করেন। তবে তিনি মনে করেন মানুষের কর্মফল তার কর্মের ওপর নির্ভরশীল। যে যেমন কাজ করবে সে তেমন ফল পাবে। তার বন্ধু জনাব আসগর নিজ কর্মস্থলে কর্মব্যস্ত একজন মানুষ। কাজের ব্যস্ততার মাঝে-মধ্যে নেশাজাতীয় দ্রব্য গ্রহণ করেন । তিনি মনে করেন, এতে দোষের কিছু নেই।
জব্বার সাহেব একজন বিশিষ্ট শিল্পপতি। অনেক দুস্থ ও অসহায় মানুষের বাস তার কারখানার পাশে। রমজান মাসের শেষের দশকে তিনি তার সম্পদ হিসাব করে নির্ধারিত অংশ গরিব অসহায় মানুষের মাঝে বিতরণ করেন। অন্যদিকে তার সহোদর আবির সাহেব এ বছর হজ সম্পাদন করার জন্য সৌদি আরব গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। আরাফাতে অবস্থান না করেই তাকে দেশে ফিরে আসতে হয়।
নজরুল পেশায় একজন মোটর শ্রমিক। সারাদিন গ্যারেজে কাজ করে সামান্য যে পারিশ্রমিক পান তা দিয়ে কোনো রকম সংসার চালান, গৃহস্থালির প্রয়োজনীয় সব জিনিস কিনতে হিমশিম খান। হঠাৎ তার একটি কুড়াল প্রয়োজন হলে নিকটতম প্রতিবেশী জব্বার সাহেবের নিকট চাইতে গেলে তিনি তাকে ফেরত দেন। নজরুলের বন্ধু কাজল একজন দরদি মানুষ'। তিনি বাজার থেকে ফেরার পথে দেখলেন, এক প্রতিবন্ধী শিশু রাস্তার পাশে বসে কাঁদছে। শিশুটিতে সে বুকে তুলে নিয়ে বাড়িতে আনলেন। কাজলের স্ত্রী তার এ কাণ্ড দেখে বলল, একজন পথে পাওয়া শিশুর প্রতি তোমার এ আচরণ সত্যিই হাস্যকর।
প্রেক্ষাপট-০১ : বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সীমান্তের 'নাফ' নদী দিয়ে প্রায়ই অবৈধ পণ্য বেচা-কেনা হয়। স্থানীয় যুবক আব্দুর রাকিব তার অন্যান্য সহাপাঠীদের সাথে পরামর্শ করে এবং স্থানীয় যুবকদের সাথে নিয়ে তা প্রতিহত করার উদ্যোগ নেয়। এছাড়াও তারা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয় যে, আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টার মাধ্যমে স্বাধীন দেশের সম্পদ রক্ষা করব। প্রেক্ষাপট-০২ : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমন ঈদের ছুটিতে বাড়িতে এসে দেখল, তার প্রতিবেশী দাদা বৃদ্ধাবস্থায় বিছানায় কাতর। প্রকৃতির সকল কার্যাদি বিছানাতেই সম্পন্ন করছে। সে তৎক্ষণাৎ তার সেবাযত্নে ব্যস্ত হয়ে গেল। বিছানা পরিবর্তন করে দিল, খাবারের ব্যবস্থা করল। সুমনের বাল্যবন্ধু শরিফ তার সাথে দেখা করতে এসে তার এ কাজ দেখে বলল, তোমার মতো মানুষের জন্য এসব কাজ করা ঠিক নয়।
জিসান সাহেব এলাকার একজন সম্ভ্রান্ত ও সকলের প্রিয় ব্যক্তি। তিনি একদিন দেখলেন, কিছু সন্ত্রাসী তার এলাকার জারিফকে ধাওয়া করছে। জারিফ তাদের থেকে বাঁচার জন্য জিসান সাহেবের নিকট আশ্রয় চাইলে তিনি তাকে আশ্রয় দেয়। সন্ত্রাসীরা তাকে নিতে চাইলে তিনি তাদের হাতে তাকে দিতে অস্বীকার করেন। জিসান সাহেবের বন্ধু মিজান সাহেব ইসলামের বিধিবিধান পালনের পাশাপাশি অসহায় ও সাহায্য প্রত্যাশী ব্যক্তিবর্গকে প্রচুর দান-খয়রাত করেন। ইয়াতিম-ভিক্ষুকদের সাথে সুন্দর ব্যবহার করেন।
শফিক এমন একটি ইবাদত পালন করেন যে সম্পর্কে মহানবি (স.) বলেন, এ ইবাদতটি ইমান ও কুফরের মাঝে পার্থক্যকারী। এ ইবাদতটি একাকী আদায় করার চেয়ে জামাআতের সাথে আদায় করলে সাতাশ গুণ বেশি সাওয়াব পাওয়া যায়। শফিকের বড় বোন সখিনা খাতুন তার নিকট থাকা স্বর্ণের অলঙ্কারের বাজারমূল্য ৫ লক্ষ টাকা থেকে বারো হাজার পাঁচশত টাকা এলাকার অসহায় গরিব মানুষের মাঝে বিতরণ করেন।
শোভন ও ইমন দুই সহোদর। সম্প্রতি এশিয়া কাপ ক্রিকেট খেলা অনুষ্ঠিত হয়। তারা দুজনে বসে খেলা দেখছিল। মাগরিবের নামাযের আযান হলে শোভন মসজিদে গেল। নামায শেষে শোভন ফিরে এসে ইমনকে নামাযের কথা বললে সে বলল, খেলা দেখা বাদ দিয়ে নামায কালাম পড়ে লাভ কী? শোভন ও ইমনের বন্ধু জুলহাস গত বছর এম.এ. পাস করে একটি চাকরির জন্য আবেদন করে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাকে সে বলে, তাকে চাকরিটা দিলে তাকে সে দুই লক্ষ টাকা দিবে। সে চাকরিটা পেয়ে কথামত কর্মকর্তাকে দুই লক্ষ টাকা প্রদান করে। বিষয়টি জেনে এলাকার ইমাম সাহেব তাকে বলেন, এভাবে অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে চাকরি পাওয়া ইসলামের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং সারাজীবন এর ফল ভোগ করতে হবে।
জনাব শাকিল এ বছর স্ত্রীকে নিয়ে হজব্রত পালন করতে যাওয়ার সময় তার বাল্যবন্ধু রশিদ সাহেবের নিকট বেশকিছু নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার রেখে যান। হজব্রত পালন শেষে বাড়ি ফিরে উক্ত অর্থ ও জিনিসপত্র ফেরত চাইলে তিনি তা ফেরত দিতে অস্বীকার করেন। জনাব সিফাত দুই-তিন বছর যাবৎ একটি চাকরি নিয়ে কানাডা প্রবাসী। এদিকে তার স্ত্রী অমার্জিত পোশাক-পরিচ্ছদ পরিধান করে শহরে ঘোরাফেরা করে। একদিন শহর থেকে বাড়ি ফেরার পথে কিছু যুবক তার গতিরোধ করে। ঘটনা শুনে তাকে উপদেশ দিতে গিয়ে তার শ্বশুর তাকে হাদিসটি শুনান - “লজ্জাশীলতার পুরোটাই কল্যাণময়” ।
জনাব আবু সালেহ একজন নির্বাচিত ইউনিয়ন চেয়ারম্যান । নির্বাচিত হওয়ার 8 পরেও তিনি পরিবারের যাবতীয় কাজকর্ম নিজ হাতে সম্পাদন করেন। তার মাসিক বেতনের সামান্য অংশ পরিবার-পরিজনের ব্যয়ভার বহনের জন্য রেখে বাকি অর্থ এলাকার গরিব-দুস্থদের পুনর্বাসন ও ধর্মীয় শিক্ষার কাজে ব্যয় করেন। অপরদিকে তার বন্ধু জামিল সাহেব একজন মানব দরদি মানুষ। একদিন রাতের বেলায় পাশের বাড়ি থেকে কান্নার আওয়াজ ভেসে এল। তিনি সকালে ফজরের নামায শেষে পাশের বাড়িতে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন, পাশের বাড়ির এক বৃদ্ধ মহিলা ব্যথা-বেদনায় বিছানায় ছটফট করছে। বৃদ্ধার বাড়িতে কোনো লোকজন নেই। তিনি তখন বাড়ি এসে তার স্ত্রীকে নিয়ে বৃদ্ধার বাড়িতে গিয়ে তার সেবাযত্ন করেন ।
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থী জীমের ধারণা, পৃথিবী হলো কর্মসম্পাদন ও ফলাফলের স্থান। যে যেমন কর্ম করবে সে তেমন ফল পায় । ভালো করলে প্রশংসিত হয়, মন্দ করলে তিরস্কৃত হয়। অপরাধ করলে আদালত ও জেল জুলুমের ব্যবস্থা আছে। জীমের এক সহপাঠী মীম একদিন তার মামার বাড়ি বেড়াতে গিয়ে এক বক্তাকে বলতে শুনল, কিয়ামত পর্যন্ত যেহেতু পৃথিবীতে মানুষের আগমন হবে সেহেতু তাদের সৎপথ প্রদর্শনের জন্য কিয়ামত পর্যন্ত নবি-রাসুল-এর আগমনও ঘটবে।
ডিজিটাল বাংলাদেশ শীর্ষক আলোচনায় প্রধান অতিথি গণিতে মুসলমানদের অবদান প্রসঙ্গে একজন মনীষীর জীবনী তুলে ধরেন, যিনি গ্রিকদের ভুল ধারণা খণ্ডন করেন এবং যিনি চক্ষু বিজ্ঞানী ছিলেন। দ্বিতীয় বক্তা বলেন, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি চর্চার মাধ্যমে মুসলমানগণ এক সময় সারাবিশ্বে নেতৃত্ব দিয়েছিল। বাঙালিরাও জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে পারদর্শী হলে 'ডিজিটাল বাংলাদেশ'ই শুধু গড়বে না তারা সারাবিশ্বের নেতৃত্ব দিতে পারবে।